My account

কলার এই অংশটি কখনই ফেলে দেবেন না, Never throw away this part of the banana.

কলার এই অংশটি কখনই ফেলে দেবেন না, Never throw away this part of the banana. কলার খোসা ভেজানো পানি যেভাবে গাছের বৃদ্ধিতে কাজ করে।

 

 

জনপ্রিয় ফল কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়াম। এগুলোর সমন্বয়ের ফলেই কলার খোসা ভেজানো পানি বা সার গাছের বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর ।

 

বাগানীদের কাছে তাদের গাছগুলো পোষা প্রাণীর মতো। গাছই বাগানীদের প্রিয় বন্ধু । কোন কোন বাগানী তার কাছে থাকা গাছগুলোকে তার পরিবারের সদস্য হিসেবে দেখেন এবং যত্ন নেওয়া দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করেন । তাই গাছের বৃদ্ধির জন্য এবং গাছকে নানারকম পোকামাকড়-রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে দূরে রাখা উচিত ।

 

সম্প্রতি রিডার্স ডাইজেস্ট-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে নিজের প্রিয় গাছেদের যত্ন নেওয়ার আরেকটি নতুন আরেকটি ডিআইওয়াই বস্তুর কথা যা গাছের জন্য খুবই উপকারী; আর তা হলো- ঘরে তৈরি ‘ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার’ বা কলার খোসা ভেজানো পানি সার ।

 

ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজাৰ বানানোর প্রক্রিয়াটা খুবই সহজ হওয়ার কারণেই এটি এখন খুব জনপ্রিয় , আর এটি সব রকমের গাছের জন্যই খুবই ভাল সার, সেকথা বলাই বাহুল্য। কলাতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেশিয়াম। যার ফলেই এটি গাছের বৃদ্ধিতে খুব ভালো কাজ করে ।

 

ব্যানানা ওয়াটার সারফাৰ্টিলাইজার কি?

 

ব্যানানা ওয়াটার সার হলো কলার খোসা ভেজানো পানির মিশ্ৰণ । যা তৈরি করা খুবই সহজ এবং কিছু কলার খোসা একটা পাত্রে রেখে পানিতে ভিজিয়ে দিতে হবে এক সপ্তাহ, এক সপ্তাহ পর সেই পানি আপনার গাছে দেওয়ার জন্য উপযোগী হবে । কলার খোসা ভেজানো পানিতে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম নির্গত হয় , যা গাছের জন্য খুবই উপকারী ও সস্তা হোমমেইড তরল সার।

 

‘ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার ‘ কি আসলেই উপকারী?

 

যদিও এই মুহুর্তে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার আসলে গাছের বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আনতে পারে ।

 

এজন্য এই নয় যে, এই সার একেবারেই কাজ করবে না। তবে এটাও সত্যি যে কলার মধ্যে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, এবং এটি এমন একটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে , গাছের পাতা ও কাণ্ড শক্তিশালী করে একই সাথে গাছ অতিরিক্ত খরা ও কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে।

 

প্রথমেই কলার খোসা টুকরো করে নিতে হবে যাতে নিউট্রিয়েন্ট গুলো সহজেই নির্গত হতে পারে পানিতে এবং একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যদি কলার খোসা সেদ্ধ করে ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার তৈরি করা হয় তাহলে পটাশিয়াম লেভেল টা আরও বেড়ে যায়, তবে এ ব্যাপারে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে ।

 

কোন কোন গাছে এই সার ব্যবহার করা যাবে?

 

শখের বাগানের অথবা বাড়ির যেকোনো গাছেই এই ব্যানান ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার ব্যবহার করা যাবে। এবং তার সাথে এর উপকারিতা নিয়ে যথেষ্ট গবেষণার অভাব থাকলেও,এই সার যে গাছের ক্ষতি করে না তা প্রায় শতভাগ নিশ্চিতভাবে বলা যায় । তবে এই সারটি গাছের বাড়তি পটাশিয়াম বিশেষ করে ফুল ও ফলের গাছের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে ।

 

তারপরও আপনি যদি ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার নিয়ে দ্বিধায় থাকেন, তাহলে প্রথমে বাগানের সল্প মেয়াদি গাছ যেমন টমেটো, মরিচ, গোলাপ, অর্কিড, কলা ইত্যাদি গাছে প্রয়োগ করে দেখুন । টমেটোর পচন রোধ করে ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার । ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজারে থাকা ম্যাগনেশিয়াম গাছকে সালোকসংশ্লেষণে সাহায্য করে থাকে , যার ফলে গাছে আরও বেশি ফুল-ফল ধরতে সাহায্য করে থাকে।

 

এই সার সব গাছের জন্য কি নিরাপদ?

 

জি, ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার প্রায় সব গাছের জন্যই নিরাপদ বলা যায় । আর এই সার গাছের বৃদ্ধিতে

কোন বাধা দেয় না । কিন্ত যদি কলা উৎপাদনের সময় সিনথেটিক কীটনাশক অথবা কলা পাকাতে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা হয়, তা আর ১০০% অর্গানিক থাকে না , এবং সারের গুনগত মান কমে যায় ।

 

আরেকটি ব্যাপার তা হলো , ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজারে শুধু কয়েকটি নিউট্রিয়েন্ট থাকে, এটি গাছের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান দিতে পারবে না। তাই শুধুমাত্র সার হিসাবে ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজারের ওপর নির্ভর করে থাকা যাবে না , এতে গাছের অন্যান্য উপাদানের ঘাটতি তৈরি হবে । ভালো হয় অন্যান্য সারের পাশাপাশি এই সার ব্যবহার করলে ।

 

ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার তৈরির পদ্ধতি :

 

১/ ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার তৈরির জন্য প্রয়োজন কিছু কলার খোসা, পানি ও একটা বড় মগ বা পানি রাখার পাত্র। আগে থেকেই কলার খোসা ও কলার কাদি জমাতে হবে। তারপর একটা বালটিতে খোসাগুলো রাখতে হবে এবং খোসা গুলোতে পরিমাণ মত পানি দিয়ে পূর্ণ করে ঢেকে দিতে হবে যাতে গন্ধ বের না হয়।

 

২/ খুব দ্রুতই যেন খোসাগুলো থেকে উপাদান নির্গত হতে পারে , তার জন্য এগুলোকে এক ইঞ্চি পরিমাপে কেটে দিলে ভালো । অথবা ব্লেন্ডারে গুরা করে দিতে পারেন।

৩/ কলার খোসায় পূর্ণ হয়ে গেলে, এটিকে ঠান্ডা, অন্ধকার কোনো স্থানে রাখতে হবে কমপক্ষে ৩ সপ্তাহের জন্য। ৩ সপ্তাহ পর খোসাগুলো কালো হয়ে যাবে সাথে পানিও কালো হয়ে যাবে, তখনই সার রেডি হবে । ১ম ব্যবহারের সময় কিছু গন্ধ আসতে পারে যা স্বাভাবিক। কিন্তু গাছে দেয়ার পর এতে গন্ধ থাকে না।

 

৪/ অন্য আরেকটি উপায় যা হলো, কলার খোসা কয়েকদিন জমিয়ে রেখে তারপর পানি ও খোসা নিয়ে সেদ্ধ করা। ৩৫ মিনিট সেদ্ধ করার পর, মিশ্রণ ঠান্ডা করতে হবে এবং মিশ্রণ থেকে খোসাগুলো ছেঁকে নিয়ে তরল পানি গাছে ব্যবহার করতে হবে। গাছে নিয়মিত পানি দেয়ার অংশ হিসেবেও ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার ব্যবহার করা যায়।

 

তবে সাধারণ তাপমাত্রায় তৈরি ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার সাথেসাথেই গাছে প্রয়োগ করা যায়। কিন্তু গরম পানিতে সেদ্ধ করা সার প্রয়োগের আগে ডাইলুট করে নিতে হবে, সেক্ষেত্রে চার ভাগ পানির সঙ্গে এক ভাগ ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

 

কখন এই সার ব্যবহার করতে হবে?

 

এই সার টা বেশিরভাগ গাছের ক্ষেত্রে সপ্তাহে যে সময়সূচি মেনে পানি দেয়া হয় গাছে, সেভাবেই ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজাৰ ও দেয়া যায় । গাছের পানি দেয়ার সময় গাছের গোড়ায় মাটিতেই দিতে হবে ব্যানানা ওয়াটার ফাৰ্টিলাইজার।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top
Scan the code